ডেটা ট্রান্সমিশন মোড
ডেটা কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে ডেটা প্রবাহের দিককে ডেটা ট্রান্সমিশন মোড বলে।
ডেটা ট্রান্সমিশন মোডের প্রকারভেদ
ডেটা প্রবাহের দিকের ভিত্তিতে প্রকারভেদ:
ডেটা প্রবাহের দিকের ভিত্তিতে ডেটা ট্রান্সমিশন মোডকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।যথা-
১.সিমপ্লেক্স মোড(Simplex Mode) বা একমুখী প্রবাহ
২.হাফ-ডুপ্লেক্স মোড(Half-Duplex Mode) বা অর্ধ-দ্বিমুখী প্রবাহ
৩.ফুল-ডুপ্লেক্স মোড(Full-Duplex Mode) বা উভমুখী প্রবাহ
সিমপ্লেক্স মোড(Simplex Mode) বা একমুখী প্রবাহ:
যে পদ্ধতিতে ডেটা শুধু একদিকে প্রবাহিত হয় তাকে সিমপ্লেক্স মোড বলে। যেমন- কীবোর্ড থেকে কম্পিউটারে ডেটা প্রেরণ, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি যোগাযোগ ব্যবস্থা। আমরা যখন রেডিও শুনি বা টেলিভিশন দেখি তখন শুধু শোনা বা দেখা যায়,এক্ষেত্রে আমরা শুধু ডেটা পাই,পাঠাতে পারি না।
হাফ-ডুপ্লেক্স মোড(Half-Duplex Mode) বা অর্ধ-দ্বিমুখী প্রবাহ:
যে পদ্ধতিতে ডেটা উভয় দিক থেকে আদান-প্রদান করা যায়,কিন্তু তা একই সময়ে সম্ভব নয় তাকে হাফ-ডুপ্লেক্স মোড বলে। যেমন- ওয়াকিটকি,ফ্যাক্স,ক্লাসে পাঠদান ইত্যাদি। হাফডুপ্লেক্স মোডে যখন একটি ডিভাইস ডেটা প্রেরণ করে, তখন অন্যটিকে অপেক্ষা করতে হয়। যেমন শ্রেণীকক্ষে শিক্ষক যখন পাঠদান করে ছাত্ররা চুপ থাকে তখন শিক্ষক থেকে শুধু ছাত্র-ছাত্রীরা ডেটা পায়। আবার ছাত্ররা যখন শিক্ষকের প্রশ্নের উত্তর দেয় তখন শিক্ষক চুপ করে শোনে, তখন ছাত্রদের কাছ থেকে ডেটা শুধু শিক্ষকের কাছে আসে , এটিই হাফ-ডুপ্লেক্স মোড। এক্ষেত্রে উভয়দিক থেকে একই সাথে ডেটা আদান প্রদান সম্ভব নয়।
ফুল-ডুপ্লেক্স মোড(Full-Duplex Mode) বা উভমুখী প্রবাহ:
যে পদ্ধতিতে ডেটা উভয় দিক থেকে একই সময়ে আদান-প্রদান করা যায়,তাকে ফুল-ডুপ্লেক্স মোড বলে। যেমন- ল্যান্ডফোন,মোবাইল ফোন ইত্যাদি।
সিমপ্লেক্স, হাফ-ডুপ্লেক্স ও ফুল-ডুপ্লেক্স মোডের পার্থক্য
সিমপ্লেক্স মোড | হাফ-ডুপ্লেক্স মোড | ফুল-ডুপ্লেক্স মোড |
---|---|---|
১.ডেটা শুধু একদিকে প্রেরণ করা যায়। | ১.উভয়দিক থেকে ডেটা আদান-প্রদান করা যায় তবে একই সময়ে সম্ভব নয়। | ১.উভয়দিক থেকে একই সময়ে ডেটা আদান-প্রদান করা যায়। |
২.কর্মক্ষমতা সবচেয়ে কম। | ২.কর্মক্ষমতা সিমপ্লেক্স এর চেয়ে বেশি কিন্তু ফুল-ডুপ্লেক্স এর চেয়ে কম। | ২.কর্মক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। |
৩.কতিপয় বিশেষায়িত কাজে ব্যবহার হয়। | ৩.ব্যবহার তুলনামূলক জটিল। | ৩.ব্যবহার তুলনামূলক সহজ। |
৪.প্রেরক ডেটা পাঠাতে পারে কিন্তু প্রাপকের কাছ থেকে ডেটা গ্রহণ করতে পারে না। | ৪.প্রেরকের ডেটা পাঠানো সম্পন্ন হলে প্রাপক ডেটা পাঠাতে পারবে। | ৪.প্রেরক ও প্রাপক উভয়ই একইসাথে ডেটা পাঠাতে পারে। |
৫.উদাহরণ- টেলিভিশন, রেডিও, মনিটর, কী-বোর্ড, পিএবিএক্স ইত্যাদি। | ৫.উদাহরণ- ওয়াকিটকি, ফ্যাক্স, এসএমএস, ক্লাসে পাঠদান ইত্যাদি। | ৫.উদাহরণ- টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি। |
প্রাপকের সংখ্যা ও ডেটা গ্রহণের ভিত্তিতে প্রকারভেদ:
প্রাপকের সংখ্যা ও ডেটা গ্রহণের অধিকারের উপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশন মোডকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।যথা-
১.ইউনিকাস্ট মোড(Unicast Mode)
২.ব্রডকাস্ট মোড(Broadcast Mode)
৩.মাল্টিকাস্ট মোড(Multicast Mode)
ইউনিকাস্ট মোড(Unicast Mode):
যে ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে একটি নোড (কম্পিউটার,প্রিন্টার বা অন্য কোন যন্ত্রপাতি) থেকে কেবলমাত্র একটি নোডের মধ্যে সিমপ্লেক্স, হাফ-ডুপ্লেক্স বা ফুল-ডুপ্লেক্স মোডে ডেটা প্রেরণ করা হয়ে থাকে তাকে ইউনিকাস্ট ট্রান্সমিশন মোড বলে।যেমন-ফ্যাক্স, টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ওয়াকিটকি, একক এসএমএম ইত্যাদি। এটি ওয়ান টু ওয়ান বা পয়েন্ট টু পয়েন্ট মোড হিসেবেও পরিচিত।
ব্রডকাস্ট মোড(Broadcast Mode):
যে ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে নেটওয়ার্কভুক্ত কোন প্রেরক নোড হতে ডেটা ট্রান্সমিট হলে ঐ নেটওয়ার্কভুক্ত সকল নোডই(প্রাপক) তা গ্রহণ করতে পারে তাকে ব্রডকাস্ট ট্রান্সমিশন মোড বলে।যেমন-টেলিভিশন ও রেডিও সম্প্রচার। ব্রডকাস্ট ট্রান্সমিশন শুধুমাত্র সিমপ্লেক্স হয়ে থাকে।
মাল্টিকাস্ট মোড(Multicast Mode):
যে ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে নেটওয়ার্কভুক্ত কোন একটি নোড থেকে ডেটা প্রেরন করলে তা নেটওয়ার্কের অধিনে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট গ্রুপের সদস্য গ্রহণ করতে পারে তাকে মাল্টিকাস্ট ট্রান্সমিশন মোড বলে।যেমন-ভিডিও কনফারেন্স, গ্রুপ এসএমএস, ওয়াকিটকি ইত্যাদি। মাল্টিকাস্টে হাফ-ডুপ্লেক্স বা ফুল-ডুপ্লেক্স হয়ে থাকে।
দ্বিতীয় অধ্যায় লেকচার-০৩: ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড/পদ্ধতি।
Written by:
Author at www.habibictcare.com
Email:habibbzm2018@gmail.com
Cell: +8801712-128532,+8801913865284