প্রথম অধ্যায় লেকচার-১৭: বায়োইনফরমেটিক্স (Bioinformatics)

Bioinformatics

বায়োইনফরমেটিক্স(Bioinformatics):

জীব সংক্রান্ত সমস্যাগুলো কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাধান করা হলে তখন তাকে বায়োইনফরমেটিক্স (Bioinformatics)  বলে। ১৯৭৮ সালে Prof. Dr. Paulien Hogeweg নামের একজন গবেষক তথ্য প্রক্রিয়াকরণে জীবন সম্পর্কিত সিস্টেমে গবেষণায় বায়োইনফরমেটিক্স শব্দটি ব্যবহার করেন। বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত ডেটা হলো জৈব তথ্য।

জৈব তথ্যে ডিএনএ,জিন,এমিনো এসিড এবং নিউক্লিক এসিডসহ অন্যান্য তথ্য থাকে। আর যখন জৈব তথ্যগুলো নিয়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে গবেষণা করা হয় তখন তাকে ড্রাইল্যাব বলে।

 

বায়োইনফরমেটিক্স এ ব্যবহৃত সফটওয়্যার:

Java, C, C++, Python, SQL, C#, XML  ইত্যাদি।

Bioinformatics

বায়োইনফরমেটিক্স এর প্রধান তিনটি কাজ:

১.ডিএনএ ক্রম থেকে প্রোটিন সিকোয়েন্স নির্নয় করা।
২.প্রোটিন সিকোয়েন্স থেকে প্রোটিন স্ট্রাকচার নির্নয় করা।
৩.প্রোটিন স্ট্রাকচার থেকে প্রোটিনের কাজ নির্নয় করা।

 

বায়োইনফরমেটিক্স এর উদ্দেশ্য:

১.জৈবিক প্রক্রিয়া সঠিকভাবে অনুধাবন করা। বিশেষ করে জীবের জনি বিষয়ক তথ্য অনুসন্ধান করা।
২.রোগ বালাইয়ের কারণ হিসেবে জিনের প্রভাব সম্পর্কিত জ্ঞান আহোরণ করা।
৩.ঔষধের গুনাগুন ও উন্নত ঔষধ আবিষ্কারের প্রচেষ্টা।

 

বায়োইনফরমেটিক্স এর গবেষণাধীন ক্ষেত্রসমূহঃ

  • Sequence alignment (সিকুয়েন্স এলাইনমেন্ট)
  • DNA Analysis (ডিএনএ বিশ্লেষণ)
  • Gene Finding (জিন ফাইন্ডিং)
  • Drug Design (ড্রাগ নকশা)
  • Drug Invention (ড্রাগ আবিস্কার)
  • Protein Structure (প্রোটিনের গঠন)

 

বায়োইনফরমেটিক্স-এর ব্যবহার

  •  মলিকুলার মেডিসিন
  • মলিকুলার বায়োলজির বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ।
  •  পার্সোনালাইজড মেডিসিন
  •  প্রিভেনটেটিভ মেডিসিন
  •  জিন থেরাপি
  •  ঔষধ উন্নয়ন
  •  মাইক্রোবায়াল জিনোম এপ্লিকেশন
  •  ওয়াস্ট ক্লিনআপ
  •  আবহাওয়া পরিবর্তন শিক্ষা
  •  বায়োটেকনোলজি
  •  এন্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স
  •  মাইক্রোবেস-এর ফরেনসিক বিশ্লেষণ
  •  বায়ো-অস্ত্র উৎপাদন
  •  বিবর্তন শিক্ষা
  •  শস্য উন্নয়ন
  •  কীট প্রতিরোধ
  • পুষ্টির মান উন্নয়ন
  •  খরা প্রতিরোধ উন্নয়ন
  •  ভেটেরিনারি বিজ্ঞান
  •  জেনেটিক ও জিনোম ডেটার মধ্যে তুলনা
  •  জিন ফাইন্ডিং গবেষণা
  •  জীব বিবর্তনের নকশা তৈরি
  •  ডিএনএ অ্যানালাইসিস
  •  নতুন ডিএনএ সিকুয়েন্স তৈরি
  •  প্রোটিন টু প্রোটিন মিথস্ক্রিয়া
  •  বিকল্প শক্তি উৎস

 

Bioinformatics এর সুবিধাসমূহ:

১. মলিকুলার (আণবিক) জেনেটিক্স এর ভিজ্যুয়ালাইজেশনকে সম্ভব করে তোলে।
২. বিপুল পরিমাণ পুনরাবৃত্তিমূলক এবং অÑপুনরাবৃত্তিমূলক তথ্যসমূহের সংরক্ষণে সহায়তা করে।
৩. অ্যালগরিদমিক ডেটা মাইনিং করা সম্ভব।
৪. প্যাটার্ন রিকগনিশন করা যায়।

 

Bioinformatics এর অসুবিধাসমূহ:

১. এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি প্রযুক্তি। প্রকল্প চালিয়ে যেতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন পড়ে।
২. এ প্রযুক্তি কিনতেও প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয় এবং বেশ জটিল একটি প্রযুক্তি।
৩. এর মাধ্যমে তথ্যের গোপনীয়তা ভঙ্গ হতে পারে। কারণ মেডিকেল ও জেনেটিক তথ্যাদি সংরক্ষণ ও বিতরণ করা হয়ে থাকতে পারে।
৪. জেনেটিক্যালি মডিফাইড ফসল কিংবা গৃহপালিত পশুপাখি ‘সুপার স্পিশিস’ সৃষ্টি করতে পারে যা প্রকৃতি বিরুদ্ধ।
৫. ব্যাপক হারে বায়োইনফরমেটিক্স এর প্রয়োগের ফলে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৬. যদিও বায়োটেকনোলজি বহু নতুন ও মূল্যবান রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করতে পারে তথাপি এদের মধ্যে অজানা কোনো রাসায়নিক তৈরি হতে পারে যা পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

 

বায়োমেট্রিক্স ও বায়োইনফরমেট্রিক্স এর পার্থক্য

বায়োমেট্রিক্স বায়োইনফরমেট্রিক্স
 ১. বায়োমেট্রিক্স হলো বায়োলজিক্যাল ডেটা মাপা এবং বিশ্লেষণ কার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি।   ১. জীবজ্ঞানের সমস্যাগুলোর যখন কম্পিউটার প্রযুক্তি কৌশল (কম্পিউটেশনাল টেকনিক) ব্যবহার করে সমাধান করা হয়, তখন সেটাকে বলা হয় বায়োইনফরমেটিক্স।
২. বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি মানুষের দেহের বৈশিষ্ট্য (যেমন: ডিএনএ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, চোখের রেটিনা এবং আইরিস, কন্ঠস্বর,চেহারা এবং হাতের মাপ ইত্যাদি) মেপে এবং বিশ্লেষণ করে বৈধতা নির্ণয় করে।   ২. বায়োইনফরমেটিক্স হলো বিজ্ঞানের সে শাখা, যা বায়োলজিক্যাল ডেটা এনালাইসিস করার জন্য কম্পিউটার প্রযুক্তি, ইনফরমেশন থিয়োরি এবং গাণিতিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে।
৩. কম্পিউটার পদ্ধতিতে নিখুঁত নিরাপত্তার জন্য বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।   ৩. মলিকুলার (আণবিক) জেনেটিক্স এর       ভিজ্যুয়ালাইজেশনকে সম্ভব করে তুলতে বায়োইনফরমেটিক্স পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
৪. এ পদ্ধতিতে মানুষের বায়োলজিক্যাল ডেটা কম্পিউটারের ডেটাবেজ সংরক্ষণ করে রাখা হয় এবং পরবর্তীতে এসব ডেটা নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিলিয়ে দেখা হয়। ডেটা মিল পেলে বৈধ বলে বিবেচিত হয় এবং অনুমতি প্রাপ্ত হয়। ৪. বিপুল পরিমাণ পুনরাবৃত্তিমূলক এবং অ-পুনরাবৃত্তিমূলক তথ্যসমূহের সংরক্ষণে সহায়তা করে। প্যাটার্ন রিকগনিশন এবং অ্যালগরিদমিক ডেটা মাইনিং করা যায়।
৫. এটি তুলনামূলকভাবে কম ব্যয়বহুল প্রযুক্তি। ৫. এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি প্রযুক্তি। প্রকল্প চালিয়ে যেতে এবং প্রযুক্তি কিনতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন পড়ে।

 

 

প্রথম অধ্যায় লেকচার-১২: দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যর বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিসমূহ।

 


 

Written by:

Habibur Rahman(Habib Sir)
Author at www.habibictcare.com
Email:habibbzm2018@gmail.com
Cell: +8801712-128532, +8801913865284

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *