প্রথম অধ্যায় লেকচার-১১: বায়োমেট্রিক্স (Biometrics)

Biometrics

বায়োমেট্রিক্স (Biometrics)

গ্রীক শব্দ “bio” (যার অর্থ Life বা জীবন) ও “metric” (যার অর্থ পরিমাপ করা) থেকে উৎপত্তি হয়েছে বায়োমেট্রিক্স (Biometrics)। বায়োমেট্রিক্স হলো বায়োলজিক্যাল ডেটা মাপা এবং বিশ্লেষণ করার প্রযুক্তি। অর্থাৎ বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয় অথবা আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিকে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়।
Biometrics

 

 

বায়োমেট্রিক্স এর প্রকারভেদ (Classification of Biometrics)

দেহের গঠন ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যেমন-

ক. দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যর বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি:
১. মুখ (Face): মুখ বা চেহারার বৈশিষ্ট্য (Facial characteristics) বিশ্লেষণ করা।
২. ফিঙ্গারপ্রিন্ট (Fingerprint): প্রত্যেকের আলাদা একক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হাতের ছাপ বিশ্লেষণ করা।
৩. হ্যান্ড জিওমেটরি (Hand Geometry): হাতের গঠন (Shape) এবং আঙ্গুলের দৈর্ঘ্যরে মাপ বিশ্লেষণ করা।
৪. আইরিস (Iris): চোখের মণির চারিপার্শ্বে বেষ্টিত রঙিন বলয় (Colored ring) বিশ্লেষণ করা।
৫. রেটিনা (Retina): চোখের পেছনের অক্ষিপটের (রেটিনার) মাপ বিশ্লেষণ করা।
৬. শিরা (Vein): হাত এবং কব্জির শিরার প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করা।
৭. ডিএনএ (DNA): কোষের মধ্যে অবস্থিত ডিএনএ বিশ্লেষণ করে ডিএনএ প্রোফাইলিং তৈরি করা।

খ. আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি:
১. কন্ঠস্বর (Voice): প্রত্যেকের কণ্ঠের ধ্বনির বৈশিষ্ট্য, সুরের উচ্চতা, সুরের মূর্ছনা, স্পন্দনের দ্রুততা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করা।
২. সিগনেচার (Signature): হাতের দস্তখত বিশ্লেষণ করা।
৩. টাইপিং কি স্ট্রোক (Typing Keystroke): নির্দিষ্ট কোনো পাসওয়ার্ড যা টাইপ করে এন্ট্রি করা হয় এবং বিশ্লেষণ করা।

 

বায়োমেট্রিক্স এর ব্যবহার (Application of Biometrics)

বর্তমানে নিরাপত্তার কাজে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ প্রযুক্তি সাধারণত দু’ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয়। যথা-
১. কোনো ব্যক্তি শনাক্তকরণ (Identification) কাজে
২. সত্যতা যাচাই (Verification) কাজে

ক. ব্যক্তি শনাক্তকরণ (Identification) কাজ:
ব্যক্তি শনাক্তকরণ কাজে প্রচলিত সনাতনী পদ্ধতিতে ভোটার আইডি, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি টোকেন নির্ভর এবং ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর ইত্যাদি জ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এতে জালিয়াতির সুযোগ থাকে। তাই বর্তমানে মানুষের নিজস্ব একক কোনো বৈশিষ্ট্যের আলোকে অর্থাৎ বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে শনাক্তকরণের কাজ করা হয়। এটি অনেক বেশি নিরাপদ ও গ্রহণযোগ্য।

খ.সত্যতা যাচাই (Verification) কাজ: এ পদ্ধতিতে কম্পিউটারে রক্ষিত বায়োলজিক্যাল ডেটার তুলনা করে ভেরিফিকেশন করা হয়।

 

বায়োমেট্রিক্সের সুবিধা :

১. যন্ত্রনির্ভর স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা হওয়ায় এতে পক্ষপাতিত্ব ঘটার কোনো সুযোগ থাকে না। ফলে এর নিখুঁত নিরাপত্তা পাওয়া সম্ভব।
২. প্রাথমিক খরচ বেশি হলেও সার্বিকভাবে খরচ কম।
৩. বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির নিরাপত্তাজনিত কীগুলো ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয় অংশ হওয়ায় তা স্থানান্তরযোগ্য নয় এবং এ কারণে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে যে কোনো ক্ষেত্রে উচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
৪. একে জাল বা নকল করা প্রায় অসম্ভব।

 

বায়োমেট্রিক্সের অসুবিধা:

১. শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভরশীল বিধায় এতে ব্যবহৃত শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলো অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক কোনো সাময়িক বা স্থায়ী পরিবর্তন শনাক্তরণের কাজটি ধীর বা অসফল করে তুলতে পারে।
২. ইন্সটলেশন খরচ বেশি।
৩. এটি পরিচালনার জন্য দক্ষ লোকের প্রয়োজন হয়।

 

 

প্রথম অধ্যায় লেকচার-১২: দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যর বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিসমূহ।

প্রথম অধ্যায় লেকচার-১৩: আচরণগত বৈশিষ্ঠ্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির ব্যখ্যা।

 

 

cryosurgery সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন


 

Written by,

Habibur Rahman(Habib Sir)
Author at www.habibictcare.com
Email:habibbzm2018@gmail.com
Cell: +8801719-686168, +8801913865284

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *