কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং(Computer Networking)
ডেটা কমিউনিকেশনের জন্য দুই বা তথোধিক ডিভাইস বা কম্পিউটারকে পরস্পর সংযুক্ত করার পদ্ধতিকে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং বলে।
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ব্যবহার বা উদ্দেশ্য(Objectives of Network)
দুই বা ততোধিক কম্পিউটারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরির প্রধান উদ্দেশ্য হলো কম্পিউটারসমুহের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার রিসোর্স শেয়ার করা। নিচে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো-
১. হার্ডওয়্যার রিসোর্স শেয়ারিং: কম্পিউটারের সাথে যুক্ত অন্যান্য যন্ত্রপাতি যেমন- প্রিন্টার, মডেম ইত্যাদি অন্য কম্পিউটার থেকে ব্যবহার করা যায়। এক কথায় কম্পিউটার নেটওয়ার্কে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ব্যবহার করা যায়। এতে করে খরচ বাঁচে।
২.সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ারিং: নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারের মধ্যে থাকা বিভিন্ন সফটওয়্যার এবং ফাইল অন্যান্য কম্পিউটার থেকে শেয়ার করা যায়।
৩.তথ্য বিনিময়: নেটওয়ার্কভুক্ত এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারের সহজেই তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।
৪.তথ্য সংরক্ষন: নেটওয়ার্কিং সুবিধা কাজে লাগিয়ে একটি কেন্দ্রীয় স্টোরেজ মিডিয়া বা সার্ভারে ক্লায়েন্ট যাবতীয় তথ্য সংরক্ষন করতে পারে। এতে করে ডেটা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
৫.দূরবর্তী স্থান থেকে ব্যবহার: নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হয়ে ঘরে বসে অফিসের অনেক কাজ করা যায়।
৬.ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট: কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর ফলে কোন প্রতিষ্ঠানের সকল ডেটা নেটওয়ার্কভুক্ত সার্ভারে স্টোর করে কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রন, রক্ষণাবেক্ষন, ব্যাকআপ রাখা ইত্যাদি কাজ করা যায়।
৭.অফিস অটোমেশন: কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করে একটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান, আপডেটকরণ, লেনদেন, রিপোর্ট তৈরিকরণ ইত্যাদি কাজ করা যায়।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর প্রকারভেদ
মালিকানা অনুসারে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর প্রকারভেদ:
মালিকানার উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ২ প্রকার। যথা-
১. প্রাইভেট নেটওয়ার্ক(Private Network)
২.পাবলিক নেটওয়ার্ক(Public Network)
প্রাইভেট নেটওয়ার্ক(Private Network): কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একক মালিকানাধীন নেটওয়ার্ককে প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বলে। এটি একটি নিয়ন্ত্রিত নেটওয়ার্ক, ফলে যে কেউ ইচ্ছা করলেই ব্যবহার করতে পারে না। এর সিকিউরিটি ব্যবস্থা অত্যন্ত মজবুত এবং ট্রাফিক কম থাকে বিধায় ডেটা ট্রান্সফার উচ্চগতি সম্পন্ন। বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম ব্যবস্থায় এটি ব্যবহৃত হয়।
পাবলিক নেটওয়ার্ক(Public Network): কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বা সংস্থার একক মালিকানাধীন নয় তবে কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার দ্বারা পরিচালিত নেটওয়ার্ককে পাবলিক নেটওয়ার্ক বলে। যে কেই চাইলেই বিনামূল্যে এ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারে। ব্যবহারকারী অসংখ্য বলে এর ট্রাফিক বেশি থাকে বিধায় ডেটা ট্রান্সফার কম গতির হয়। যেমন-টেলিফোন নেটওয়ার্ক সিস্টেম এবং ইন্টারনেট ইত্যাদি।
পাবলিক নেটওয়ার্ক ও প্রাইভেট নেটওয়ার্ক এর পার্থক্য
পাবলিক নেটওয়ার্ক | প্রাইভেট নেটওয়ার্ক |
১.পাবলিক নেটওয়ার্ক কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একক মালিকানাধীন নেটওয়ার্ক নয়। | ১.প্রাইভেট নেটওয়ার্ক কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একক মালিকানাধীন নেটওয়ার্ক হয়ে থাকে। |
২.ট্রাফিক বেশি। | ২.ট্রাফিক কম। |
৩.ডেটা ট্রান্সফার কম গতির | ৩.ডেটা ট্রান্সফার উচ্চ গতির |
৪.সিকিউরিটি ব্যবস্থা কম নিরাপদ | ৪.সিকিউরিটি ব্যবস্থা অত্যন্ত মজবুত |
৫.প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। | ৫.ব্যক্তি মালিকানাধীনে নিয়ন্ত্রিত হয়। |
৬.যে কেউ এ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারে। | ৬.যে কেউ এ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারে না। |
৭.উদাহরন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট এর নিজস্ব নেটওয়ার্ক । | ৭.উদাহরন:ব্যাংকের এটিএম। |
নিয়ন্ত্রন ও সেবা প্রদান অনুসারে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের শ্রেণিবিভাগ
নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রন কাঠামো ও সেবা প্রদানের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১.সেন্ট্রালাইজড নেটওয়ার্ক: যে নেটওয়ার্ক একটি প্রধান বা হোস্ট কম্পিউটার ও টার্মিনাল নিয়ে গঠিত এবং এক বা একাধিক ক্লায়েন্টসমূহ সরাসরি কেন্দ্রীয় সার্ভার তথা হোস্ট কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত থাকে সেটিকে সেন্ট্রালাইজড নেটওয়ার্ক বলা হয়।
২. ডিস্ট্রিবিউটেড নেটওয়ার্ক: যে নেটওয়ার্ক পরস্পর সংযুক্ত কিছু ওয়ার্কস্টেশন, স্টোরেজ ডিভাইস এবং প্রয়োজনীয় ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস নিয়ে গঠিত সেটিই ডিস্ট্রিবিউটেড নেটওয়ার্ক ।
৩. হাইব্রিড নেটওয়ার্ক: সেন্ট্রালাইজড নেটওয়ার্ক ও ডিস্ট্রিবিউটেড নেটওয়ার্ক এর সংমিশ্রণে যে নেটওয়ার্ক তৈরি হয় তাকে হাইব্রিড নেটওয়ার্ক বলে। এ নেটওয়ার্কে হোস্ট কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রন ও প্রসেসিং এর পাশাপাশি ডিস্ট্রিবিউটেড নেটওয়ার্ক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় এটি বর্তমানে অধিক জনপ্রিয়।
ভৌগোলিক বিস্তৃতি অনুসারে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের শ্রেণিবিভাগ
ভৌগোলিক বিস্তৃতি অনুসারে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক চার প্রকার। যথা-
১. পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক(PAN)
২. লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক(LAN)
৩. মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক(MAN)
৪. ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক(WAN)
পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক(PAN):
PAN এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Personal Area Network । সাধারণত ১০ মিটার এর মধ্যে সীমাবদ্ধ কোন ব্যক্তির বিভিন্ন ডিভাইসের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের উদ্দেশ্যে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তাকে পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা PAN বলে। ব্যক্তিগত ডিভাইসগুলোর উদাহরণ: ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, পিডিএ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ওয়্যারলেস, ইউএসবি, ব্লুটুথ, ওয়েব ক্যামেরা, সাউন্ড সিস্টেম ইত্যাদি।
PAN এর সুবিধা/বৈশিষ্ট্য:
১.এ ধরনের নেটওয়ার্ক সহজে যে কোন জায়গায় তৈরি করা যায়।
২.খরচ তুলানামূলক কম।
৩.দ্রুত তথ্য আদান প্রদান করা যায়।
৪. সাধারণত ১ থেকে ১০ মিটারের মধ্যে এ নেটওয়ার্কের ব্যাপ্তি সীমাবদ্ধ থাকে।
৫.ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ব্যবহার করে WPAN তৈরি করা সম্ভব।
৬.নয়েজ দ্বারা প্রভাবিত হয় না।
৭.সীমিত অঞ্চলে অবস্থিত ব্যক্তিগত ডিভাইসসমূহের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক।
৮.PAN নেটওয়ার্কের ডিভাইসগুলোর সংযোগ তারযুক্ত বা তারবিহীন হতে পারে।
৯.PAN নেটওয়ার্কগুলো তুলনামূলকভাবে সুরক্ষিত এবং নিরাপদ।
PAN এর অসুবিধা:
১.প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্ক ডিভাইসের মূল্য বেশি।
২. ডেটা ট্রান্সমিশন গতি কম।
৩. বেশি দূরত্বে এ নেটওয়ার্ক তৈরি করা যায় না বা দূরত্ব সীমা কম।
লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক(LAN):
LAN এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Local Area Network । সাধারণত ১ কি.মি. বা তার কম এরিয়ার মধ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কম্পিউটার বা অন্য কোন পেরিফেরাল ডিভাইস সংযুক্ত করে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তাকে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN বলে। একই ভবনের একই তলায় বা বিভিন্ন তলায়, পাশাপাশি ভবন বা নির্দিষ্ট একটি ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কম্পিউটারগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপন করে LAN তৈরি করা হয়। ল্যান এর টপোলজি সাধারণত স্টার, রিং ও ব্রডকাষ্ট চ্যানেল পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। LAN এ ক্যাবল হিসেবে সাধারণত কো-এক্সিয়াল ও ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যবহৃত হয় তাছাড়া তারবিহীন পদ্ধতিতেও সংযোগ দেওয়া যায়।। ছোট-মাঝারি অফিসে ল্যান তৈরি করে প্রিন্টার, মডেম, স্ক্যানার ইত্যাদি ডিভাইসের জন্য সাশ্রয় করা যায়।
LAN এর বৈশিষ্ট্য:
১. এ নেটওয়ার্ক স্থাপন ও রক্ষনাবেক্ষণ পদ্ধতি সহজ ও খরচ কম।
২. ডেটা স্থানান্তরের হার সাধারণত 10Mbps-100Mbps
৩. সীমিত দূরত্বের মধ্যে এর কার্যক্রম সীমাবদ্ধ।
৪. শ্রেণি সংযোগের মাধ্যমে কম্পিউটারগুলো সংযুক্ত হয়।
৫. ব্যবহার করা সহজ।
৬. কম্পিউটারসমূহকে তার বা তারবিহীন পদ্ধতিতে সংযোগ দেওয়া যায়।
৭. এ ধরনের নেটওয়ার্কে HAN, SAN, WLAN ও CAN স্থাপন করা যায়।
লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক দিয়ে ক্যাম্পাস/কর্পোরেট এরিয়া নেটওয়ার্ক বা CAN গঠন করা যায়।
ক্যাম্পাস এরিয়া নেটওয়ার্ক(CAN):
অনেকগুলো LAN সংযুক্ত করে CAN গঠিত হয়। অর্থাৎ দুই বা ততোধিক LAN কে সংযুক্ত করে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় তাকে ক্যাম্পাস/কর্পোরেট এরিয়া নেটওয়ার্ক বা CAN বলে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়/বড় অফিস কমপ্লেক্সের একাধিক ভবনে স্থাপিত LAN সংযুক্ত করে CAN ব্যবহার করা হয়। এর বিস্তৃতি ১ থেকে ৫ কি.মি. পর্যন্ত হতে পারে। এ নেটওয়ার্ক স্থাপন ও রক্ষনাবেক্ষণ পদ্ধতি সহজ ও খরচ কম।
নেটওয়ার্কের নিয়ন্ত্রন কাঠামো ও সার্ভিস প্রদানের উপর ভিত্তি করে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা LAN কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক
২.পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক
ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক:
ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক পদ্ধতিতে একটি কম্পিউটারকে সার্ভার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এ সার্ভারের সাথে একাধিক কম্পিউটারকে সংযোগ দেওয়া হয় যেগুলোকে ক্লায়েন্ট বলে। সার্ভার কম্পিউটারটি ক্লায়েন্ট পিসির জন্য প্রয়োজনীয় সার্ভিস প্রদান করে। সার্ভিসগুলো-ডেটা ফাইল, প্রিন্টার, প্রিন্ট মেসেজ, ডেটাবেস,বিভিন্ন এপ্লিকেশন সফটওয়্যার ইত্যাদি।
পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক:
এই ধরণের নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন সার্ভার ব্যবহৃত হয় না এবং প্রতিটি নোড/পিসি একইসাথে ক্লায়েন্ট এবং সার্ভার উভয় হিসেবে কাজ করে। এই ধরণের নেটওয়ার্কে প্রতিটি নোড/পিসি সমানভাবে রিসোর্স অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারে। প্রতিটি কম্পিউটার তার ডেটার নিরাপত্তা বিধানে নিজেই দায়ী থাকে। এই ধরণের নেটওয়ার্কে সর্বাধিক ২৫ টি কম্পিউটার সমর্থন করে। প্রতিটি পিসির ডেটা বা ফাইল অন্যান্যদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
শিক্ষার্থীদের কাজ: ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক ও পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক এর পার্থক্য লেখ।
মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক(MAN):
MAN এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Metropolitan Area Network । একটি শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত কম্পিউটারসমূহ, বিভিন্ন ডিভাইস ও LAN গুলোর সংযোগে যে নেটওয়ার্ক গঠিত হয় তাকে মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক বা MAN বলে। এক্ষেত্রে একাধিক LAN কে সংযুক্ত করার জন্য ফাইবার অপটিক ক্যাবলকে ব্যাকবোন হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং নেটওয়ার্ক ডিভাইস হিসেবে রাউটার, সুইচ, হাব, ব্রিজ, গেটওয়ে ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
সাধারণত একটি শহরের কোনো ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখা অফিসের মধ্যে যোগাযোগের জন্য এধরনের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়। মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্কের ডিভাইসগুলোর সংযোগ তারযুক্ত বা তারবিহীন হতে পারে। যখন তারবিহীন সংযোগ দেওয়া হয়, তখন তাকে WMAN (Wireless Metropolitan Area Network) বলা হয়। এই ধরণের নেটওয়ার্কে তার মাধ্যম হিসেবে টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল, কো এক্সিয়াল ক্যাবল বা ফাইবার অপটিক ক্যাবল এবং তারবিহীন মাধ্যম হিসেবে রেডিও ওয়েব, মাইক্রোওয়েব ব্যবহৃত হয়। MAN এ ট্রি ও হাইব্রিড
টপোলজি হতে পারে।
MAN এর বৈশিষ্ট্য:
১. MAN এর বিস্তৃতি ৫০ কি.মি. পর্যন্ত হতে পারে।
২.খরচ তুলনামূলক কম।
৩. বেশি পরিমাণ তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।
৪. এর মালিকানা সাধারণত কোন সংস্থা হয়ে থাকে।
৫. এটি LAN এর চেয়ে দ্রুতগতির।
LAN ও MAN এর মধ্যে পার্থক্য
লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক(LAN) | মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক(MAN) |
১.LAN এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Local Area Network. | ১.MAN এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Metropolitan Area Network. |
২.সাধারণত ১ কি.মি. বা তার কম এরিয়া নিয়ে গঠিত হয়। | ২.MAN এর বিস্তৃতি ৫০ কি.মি. পর্যন্ত হতে পারে। |
৩.LAN এর গতি কম। | ৩.MAN এর গতি LAN এর চেয়ে বেশি। |
৪.একটি রুম বা বিল্ডিং বা একই ক্যাম্পাস ভিত্তিক হয়। | ৪.কতগুলো LAN এর সমন্বয়ে একটি শহরভিত্তিক হয়ে থাকে। |
৫.একক ব্যক্তি মালিকানাধীন বা কিছু সংখ্যক লোকের একটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত করে থাকে। | ৫.মালিকানা সাধারণত কোন সংস্থা হয়ে থাকে। |
৬.উদাহরণ: ল্যাবে একাধিক কম্পিউটারের মধ্যে নেটওয়ার্ক। | ৬.উদাহরণ: ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক। |
ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক(WAN):
WAN এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Wide Area Network । অনেক বড় ভৌগোলিক বিস্তৃতিতে অবস্থিত LAN, MAN, কম্পিউটার ও
বিভিন্ন ডিভাইসগুলোর সংযোগে যে নেটওয়ার্ক গঠিত হয় তাকে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বা WAN বলে। একটি দেশের এক শহরের সাথে অন্য শহর, এক দেশের সাথে অন্য দেশ, এক মহাদেশের সাথে অন্য মহাদেশের মধ্যে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা তৈরি করার জন্য WAN গঠিত হয়। এক কথায় WAN এর বিস্তৃতি সমগ্র দেশ বা পৃথীবি জুড়ে হতে পারে, যেমন-ইন্টারনেট।
WAN এর মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজিং, ফাইল ডাউনলোড, অনলাইন কেনাকাটা, E-mail আদান-প্রদান ইত্যাদি করা যায়।
WAN এর সুবিধা/বৈশিষ্ট্য:
১.মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ডেটা ও সংবাদ পাঠানো যায়।
২. বিশ্বের যে কোন স্থানে E-mail পাঠানো যায়।
৩. অনলাইন শপিং করা যায়।
৪. ক্লাউড কম্পিউটিং সুবিধা পাওয়া যায়।
৫. ঘরে বসে বিশ্বকে জানা ও দেখা যায়।
৬. অনলাইনে বিশ্বের যে কোন দেশের কলেজ, বিশ্বদ্যিালয়ে ক্লাস করা এবং ডিগ্রি অর্জন করা যায়।
৭. বিভিন্ন তথ্য মেমোরি ব্যবস্থায় সংগ্রহ, ব্যবহার ও অল্প সময়ে কাউকে পাঠানো যায়।
৮. বিশ্বের যে কোন স্থানে ভয়েস ও ভিডিও কনফারেন্সিং করা যায়।
LAN ও WAN এর মধ্যে পার্থক্য
লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক(LAN) | ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক(WAN) |
১.LAN এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Local Area Network. | ১.WAN এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Wide Area Network. |
২.সাধারণত ১ কি.মি. বা তার কম এরিয়া নিয়ে গঠিত হয়। | ২.WAN এর বিস্তৃতি সমগ্র দেশ বা পৃথীবি জুড়ে হতে পারে। |
৩.LAN এর গতি WAN এর তুলনায় বেশি। | ৩.WAN এর গতি LAN এর চেয়ে কম। |
৪.LAN এ কখনো মডেম ব্যবহার করা হয় না। | ৪.WAN এ বিভিন্ন ধরনের মডেম ব্যবহৃত হয়ে থাকে। |
৫.LAN এর সাথে টেলিযোগাযোগের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। | ৫.WAN এর অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে টেলিযোগাযোগ। |
৬.উদাহরণ: ল্যাবে একাধিক কম্পিউটারের মধ্যে নেটওয়ার্ক। | ৬.উদাহরণ: ইন্টারনেট। |
দ্বিতীয় অধ্যায় লেকচার-০৯: মোবাইল কমিউনিকেশন(Mobile Communication)
Written by:
Author at www.habibictcare.com
Email:habibbzm2018@gmail.com
Cell: +8801712-128532,+8801913865284