প্রথম অধ্যায় লেকচার-৬: ই-কমার্স(E-Commerce or ecommerce) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।

ecommerce

ই-কমার্স (E-Commerce or ecommerce) :

ব্যবসা-বানিজ্য:

মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে অর্থ বিনিয়োগ করে সেবা বা পন্যের বিনিময় করাকে ব্যবসা বলে। অপরদিকে পণ্যের কাঁচামাল সংগ্রহ,প্রক্রিয়াকরন,উৎপাদন,মজুদকরন, বিতরন, বাজারজাতকরন থেকে ভোক্তার কাছে পৌছানো পর্যন্ত প্রক্রিয়াকে বানিজ্য বলে। অর্থাৎ“মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে বৈধভাবে অর্থ বিনিয়োগ করে ভোক্তার কাছে পৌছানো পর্যন্ত সকল প্রক্রিয়াকে ব্যবসা-বানিজ্য বলে”। বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য জগতে যেমন-দোকান, অফিস, ব্যাংক, বীমা কোম্পানি ইত্যাদিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের বেতন, ভাতা, ওভারটাইম, আয়কর, প্রভিডেন্ট ফান্ড ইত্যাদি যোগ বিয়োগ করে মোট বেতন হিসাব করতে কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। নিচে কম্পিউটার ব্যবহৃত ব্যবসা-বাণিজ্য ই-কমার্স (E-Commerce or ecommerce) সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

 

ই-কমার্স(ecommerce):

ইন্টারনেট বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয়ের কাজকে ইলেকট্রনিক কমার্স বা সংক্ষেপে ই-কমার্স বলে। ই-কমার্সকে অনেক সময় অনলাইন শপিংও বলা হয়ে থাকে।

ই-কমার্স (ecommerce)প্রতিষ্ঠান:

বিশ্বের নামকরা কিছু ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এর উদাহরণ- alibaba.com, amazon.com, ebay.com, walmart.com, indiamart.com
দেশীয় নামকরা কিছু ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এর উদাহরণ daraz.com.bd, rokomari.com, ajkerdeal.com ইত্যাদি।
আধুনিক ইলেকট্রনিক কমার্স (E-Commerce or ecommerce) সাধারণত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর মাধ্যমে বাণিজ্য কাজ পরিচালনা করে।
E-Commerce or ecommerce

আবিষ্কারক:

ই-কমার্সের জনক হলেন ব্রিটিশ উদ্দোক্তা ও উদ্ভাবক মাইকেল অল্ডরিচ (১৯৪১-২০১৪)। তিনি ১৯৭৯ সালে প্রথম অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনা করেন। যা পরে ই-কমার্স নামে পরিচিতি লাভ করে।

 

ই-কমার্সের(ecommerce)বৈশিষ্ঠ্য :

ই-কমার্স পদ্ধতিটি কয়েকটি বিশেষ বৈশিষ্ঠের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নিচে সেসকল বৈশিষ্ঠগুলো দেওয়া হলো-
১.সর্বব্যাপিতা ২.সকল জায়গায় প্রবেশ যোগ্যতা ৩.পন্য বা সেবা আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন ৪.ক্রেতা ও বিক্রেতার উভয়মুখী যোগাযোগ ৫.ব্যক্তিগতভাবে যত্নশীলতা ৬.সঠিক মূল্য ও সময় উপযোগিতা ৭. সততা

 

ই-কমার্স(ecommerce)বিভিন্ন ধরনের হতে পারে-

১.ব্যবসা থেকে ব্যবসা(B2B): খুচরা ব্যবসায়ী থেকে পাইকারী ব্যবসায়ী অথবা, পাইকারী ব্যবসায়ী থেকে খুচরা ব্যবসায়ীর সাথে লেনদেন হলো ব্যবসা থেকে ব্যবসা।
২.ব্যবসা থেকে ভোক্তা(B2C): খুচরা ব্যবসায়ী বা পাইকারী ব্যবসায়ী যখন ভোক্তার সাথে লেনদেন করেন তখন সেটা ব্যবসা থেকে ভোক্তা।
৩.ভোক্তা থেকে ব্যবসা(C2B): ভোক্তা যখন কোন ব্যবসায়ীর সাথে লেনদেন করেন তখন সেটা ভোক্তা থেকে ব্যবসা।
৪.ভোক্তা থেকে ভোক্তা(C2C): যখন একজন ভোক্তা অপর একজন ভোক্তার সাথে সরাসরি লেনদেন করেন তখন সেটা ভোক্তা থেকে ভোক্তা হয়ে থাকে।

 

ই-কমার্সের ব্যবহার(Use of ecommerce):

তথ্য প্রযুক্তির যুগে ই-কমার্সের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে ই-কমার্সের ব্যবহার নেই। নিচে ই-কমার্সের বিভিন্ন ব্যবহার তুলে ধরা হলো-

১.ক্রয়-বিক্রয়: গাড়ি,বাড়ি,কম্পিউটার,মোবাইলসহ বিভিন্ন পন্য।
২.ই-সংগ্রহ: ডাক-টিকেট,মুদ্রা,মনোগ্রাম।
৩.মোবাইল বানিজ্য: মূল্য পরিশোধ,অন-লাইন টিকেট,ব্যাংকিং।
৪.প্রচার সেবা: নিলাম,অনলাইন লিফলেট,বিজ্ঞাপন,তুলনামূলক মূল্যসেবা।
৫.রিটেইল সার্ভিস: ভার্চুয়াল ব্যাংক,অনলাইনের মাধ্যমে পন্য সরবরাহ, ক্রেডিট কার্ড,কুরিয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন উৎসবে পন্য সরবরাহ।
৬.অরলাইন পন্য ও সেবা: ই-বুক, ডিজিটাল বুক, অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার, ডিভাইস ড্রাইভার, প্রোগ্রামিং টুলস ইত্যাদি।

 

ই-কমার্সের সুবিধা(Advantage of ecommerce):

১.দ্রুত লেনদেন সুবিধা।
২.ব্যবসা পরিচালনা করা অনেক সহজ ও লভ্যাংশের পরিমান বেশি হয়ে থাকে।
৩.দ্রুত ক্রয়/বিক্রয় পদ্ধতি, সহজে পণ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
৪.ব্যবসায় পরিচালনায় খরচ কমায়।
৫.যে কোন দূরত্ব অতিক্রম করে সহজেই ক্রেতার কাছে পৌঁছা যায়।
৬.পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন করে।
৭.কম খরচে উন্নত সেবা প্রদান করে।
৮.বাহ্যিক সেটআপ ছাড়াই ব্যবসা করা যায়।
৯.সহজেই ব্যবসা শুরু এবং ব্যবস্থাপনা করা যায়।
১০.ক্রেতা সরাসরি উপস্থিত না হয়ে প্রোডাক্ট নির্বাচন করতে পারে।

 

ই-কমার্সের অসুবিধাসমূহ(Disadvantage of ecommerce):

১.দক্ষ লোকবলের অভাব।
২.উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগ ব্যয়বহুল।
৩.মাত্রাতিরিক্ত অর্ডার সরবরাহের সমস্যা।
৪.দূরবর্তী স্থানের অর্ডার ক্ষেত্রবিশেষে ব্যয়বহুল।
৫.আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ সমস্যা।
৬.লেনদেনর নিরাপত্তা সমস্যা।

 

ই-কমার্সের সাথে সম্পর্কিত কিছু বিষয়:

মোবাইল কমার্স(M-Commerce):

তারবিহীন সুবিধা অর্থাৎ মোবাইলের মাধ্যমে গ্রাহকের হাতে ই-মার্স ধারনাটি পৌছানো হলো মোবাইল কমার্স। অন্য কথায় বলা যায়, মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোন সেবা বা পন্য ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যম হলো মোবাইল কমার্স।
M-Commerce

বারকোড(Bar Code):

বারকোড হলো মেশিনে তৈরি এমন এক ধরনের সাংকেতিক কোড যার মধ্যে পন্যের গুনগত মান, পন্যের নাম, প্রস্তুতকারীর নাম,পন্যের মূল্যসহ বিস্তারিত লুকায়িত থাকে। বারকোড পড়ার জন্য বারকোড রিডেবল মেশিন প্রয়োজন হয়।

Bar Code

কিউআর কোড(QR-Code):

সংখ্যা,বর্ণ,বাইনারী সংকেত ও কান্দজী দ্বারা তৈরি ডেটা। এছাড়া ফোন নম্বর ও সাইটের ইউআরএল ছবি আকারে এনকোড করে রাখা একধরনের ম্যাট্রিক্স বারকোড-ই হলো(QR-Quick Response)কোড।

QR Code

ইলেকট্রিক ফান্ড ট্রান্সফার(EFT):

কম্পিউটারভিত্তিক সিস্টেমের মাধ্যমে এক বা একাধিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের একাধিক একাউন্ট এর মধ্যে অর্থ স্থানান্তর বা বিনিময় প্রক্রিয়াকে ইলেকট্রিক ফান্ড ট্রান্সফার বলে। ব্যাংকিং কার্ড বা চেক এর মাধ্যমে অর্থ উঠানো, স্থানান্তর বা বিনিময় এবং মূল্য পরিশোধ এর সাথে সম্পর্কিত।

 

 

প্রথম অধ্যায়ের লেকচার-০৫ : টেলিমেডিসিন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন


 


Written by:

Habibur Rahman(Habib Sir)
Author at www.habibictcare.com
Email:habibbzm2018@gmail.com
Cell: +8801712-128532,+8801913865284

4 Comments.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *