তৃতীয় অধ্যায় লেকচার-০১:সংখ্যা পদ্ধতি ও এর প্রকারভেদ।

Number System

সংখ্যা পদ্ধতি(Number System)

বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন বা অঙ্ক(ডিজিট) ব্যবহার করে সংখ্যা লেখা ও প্রকাশ করার পদ্ধতিতে সংখ্যা পদ্ধতি বা Number System বলে।

ডিজিট বা অঙ্ক: সংখ্যা তৈরির ক্ষুদ্রতম প্রতিককে অঙ্ক বলে। যেমন ৭০ একটি সংখ্যা যেখানে ৭ এবং ০ অঙ্ক দুটির সমন্বয়ে গঠিত।

 

সংখ্যা পদ্ধতির প্রকারভেদ:

সংখ্যা পদ্ধতি প্রধানত ২ প্রকার। যথা-
১.নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি
২.পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি

নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি:যে সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যার মান সংখ্যায় ব্যবহৃত অঙ্কসমূহের অবস্থানের উপর নির্ভর করে না তাকে নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। যেমন-হায়ারোগ্লিফিক্স, রোমান, মেয়ান সংখ্যা পদ্ধতি।

পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি:যে সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যা লিখে প্রকাশ করার জন্য নিজস্ব মান, স্থানীয় মান, বেস বা ভিত্তির প্রয়োজন হয় তাকে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে।

এখানে, বেস বা ভিত্তি হলো কোন সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট যে কয়টি অঙ্ক বা প্রতিক ব্যবহৃত হয় তার সংখ্যাকে ঐ সংখ্যা পদ্ধতির বেস বা ভিত্তি বলে।

পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি অনেক ধরনের হয়ে থাকে তবে গাণিতিক হিসাব বা ডিজিটাল বর্তনীতে সংকেত প্রদানের দিক বিবেচনায় প্রচলিত পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি ৪ ধরনের। যথা-
১.দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি(Decimal Number System)
২.বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি(Binary Number System)
৩.অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি(Octal Number System)
৪.হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি(Hexadecimal Number System)

 

দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি(Decimal Number System):

যে সংখ্যা পদ্ধতিতে 0 থেকে 9 মোট দশটি মৌলিক প্রতিক বা অঙ্ক ব্যবহৃত হয় তাকে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি বলে। দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ১০টি অঙ্ক হলো-0,1,2,3,4,5,6,7,8,9 । যেহেতু এ সংখ্যা পদ্ধতিতে 0 থেকে 9 মোট দশটি অঙ্ক ব্যবহৃত হয় সুতরাং এর বেস বা ভিত্তি 10 । উদাহরণ: (257)10 

 

বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি(Binary Number System):

যে সংখ্যা পদ্ধতিতে 0 ও 1 মাত্র দুটি মৌলিক অঙ্ক বা চিহ্ন ব্যবহৃত হয় তাকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বলে। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট দুটি অঙ্ক বা চিহ্ন ব্যবহৃত হয় সুতরাং এর বেস বা ভিত্তি 2 । উদাহরণ: (10110)

 

অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি(Octal Number System):

যে সংখ্যা পদ্ধতিতে 0 থেকে 7 মোট আটটি মৌলিক প্রতিক বা অঙ্ক ব্যবহৃত হয় তাকে অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ৮টি অঙ্ক হলো-0,1,2,3,4,5,6,7 । যেহেতু এ সংখ্যা পদ্ধতিতে 0 থেকে 7 মোট ৮টি অঙ্ক ব্যবহৃত হয় সুতরাং এর বেস বা ভিত্তি 8 । উদাহরণ: (547)

 

হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি(Hexadecimal Number System):

যে সংখ্যা পদ্ধতিতে 0 থেকে 9 এবং A,B,C,D,E,F মোট ১৬টি মৌলিক প্রতিক বা অঙ্ক ব্যবহৃত হয় তাকে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ১৬টি অঙ্ক হলো-0,1,2,3,4,5,6,7,8,9,A,B,C,D,E,F । এখানে,A এর সমতুল্য দশমিক মান-10 এবং একইভাবে B,C,D,E,F
এর সমতুল্য দশমিক মান যথাক্রমে-11,12,13,14,15 । যেহেতু এ সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট ১৬টি অঙ্ক ব্যবহৃত হয় সুতরাং এর বেস বা ভিত্তি 16 । উদাহরণ: (5D)16 

 

বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতির তুলনামূলক ছক

সংখ্যা পদ্ধতির নাম মৌলিক চিহ্ন বা অঙ্ক বেস বা ভিত্তি উদাহরণ আবিষ্কারক/জনক/উদ্ভাবক ব্যবহার
দশমিক  0,1,2,3,4,5,6,7,8,9 10 (257)10  মহর্ষি আর্যভট্ট  মানুষের হিসাব-নিকাশ ও গণনার কাজে ।
বাইনারি 0,1 2 (10110) গটফ্রেইড ভন উইলিয়াম লিবনিজ  কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে।
অক্টাল 0,1,2,3,4,5,6,7 8 (547) সুইডেনের রাজা  ৭ম চার্লস  আধুনিক কম্পিউটার তৈরির প্রাথমিক অবস্থায় ও ইউনিক্স সিস্টেমে।
 হেক্সাডেসিমাল 0,1,2,3,4,5,6,7,8,9
A,B,C,D,E,F
16 (5D)16  ……………  সুপার কম্পিউটার,মেইনফ্রেম কম্পিউটার
তথা কম্পিউটার সিস্টেমে।

 

***0 থেকে 32 পর্যন্ত দশমিক সংখ্যার সমতুল্য বাইনারি, অক্টাল ও হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা নিচের ছকে দেখানো হল-

 দশমিক সংখ্যা
(0-9) 
 বাইনারি সংখ্যা 
(0 & 1) 
 অক্টাল সংখ্যা
(0-7)  
 হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা
(0-9,A,B,C,D,E,F)  
0 0 0 0
1 1
Last Digit
1 1
2 10 2 2
3 11 3 3
4 100 4 4
5 101 5 5
6 110 6 6
7 111 7
Last Digit
7
8 1000 10 8
9
Last Digit
1001 11 9
10 1010 12 A
11 1011 13 B
12 1100 14 C
13 1101 15 D
14 1110 16 E
15 1111 17 F
Last Digit
16 10000 20 10
17 10001 21 11
18 10010 22 12
19 10011 23 13
20 10100 24 14
21 10101 25 15
22 10110 26 16
23 10111 27 17
24 11000 30 18
25 11001 31 19
26 11010 32 1A
27 11011 33 1B
28 11100 34 1C
29 11101 35 1D
30 11110 36 1E
31 11111 37 1F
32 100000 40 20

নোট: উপরের ছকটি ভালোভাবে বুঝতে হলে নিচের লিংক থেকে ভিডিও ক্লাসটি দেখে আসতে হবে-

 

শিক্ষার্থীর কাজ: 33 থেকে 50 পর্যন্ত দশমিক সংখ্যার সমতুল্য বাইনারি, অক্টাল ও হেক্সাডেসিমাল সংখ্যার ছকে তৈরি করে দেখাও।

[ নোট : উপরোক্ত চার ধরনের অর্থাৎ দশমিক, বাইনারি, অক্টাল, হেক্সাডেসিমাল ছাড়াও কিছু সংখ্যা পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। যেমন- ৩ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, ৪ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, ৫ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, ৬ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি ইত্যাদি এমন সংখ্যা পদ্ধতি হতে পারে।

৫ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি যদি আলোচনা করি, যে সংখ্যা পদ্ধতিতে 0 থেকে 4 এই ৫টি অংক ব্যবহৃত হবে সেটিই ৫ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। এতে ব্যবহৃত অংকগুলি-0,1,2,3,4 । ৫ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতির প্রথম ১১ টি অংক যদি লিখি তা হবে-0,1,2,3,4,10,11,12,13,14,20
এভাবে,৩/৪/৬ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি সম্পর্কেও আলোচনা করা যায়। ]

 

দ্বিতীয় অধ্যায় লেকচার-০৫: ডেটা কমিউনিকেশন মাধ্যম ও এর প্রকারভেদ।



Written by:

Habibur Rahman(Habib Sir)
Author at www.habibictcare.com
Email:habibbzm2018@gmail.com
Cell: +8801712-128532,+8801913865284

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *