চতুর্থ অধ্যায় লেকচার-১২: ওয়েবসাইট ডিজাইন ও পাবলিশিং(Website Publishing)।

Website Publishing

ওয়েবপেজ ডিজাইনিং

ওয়েবপেজ ডিজাইন হচ্ছে একটি ওয়েবপেজের জন্য বাহ্যিক কাঠামো তৈরি করা, যেখান থেকে ভিজিটররা সহজে প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে পারে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট বিষয় নির্ধারণ, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং ওয়েবপেজ প্রদর্শন এই তিনটি বিষয়ের সম্মিলিত রুপ।

সুন্দর ও আকর্ষণীয় ওয়েবপেজ ডিজাইন এবং ডেভেলেপমেন্ট এর ক্ষেত্রে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। ধাপগুলো হলো-

  • পরিকল্পনা : একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর ওয়েবসাইটের লক্ষ, উদ্দেশ্য, সম্ভাব্য ব্যবহারকারীর সংখ্যা, প্রদর্শিতব্য বিষয়বস্তু, ওয়েবসাইটের গুণগতমান ইত্যাদি বিষয়ের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
  • ডিজাইন: এই ধাপে ওয়েবসাইটের পেজগুলোর লে-আউট কেমন হবে তা নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ তথ্যগুলো ওয়েবপেজের কোন অংশে কিভাবে প্রদর্শিত হবে তা নির্ধারণ করা হয়। এ কাজটি বিভিন্ন ডিজাইনিং টুল যেমন-ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর, গিম্প ইত্যাদির সাহায্যে করা হয়।
  • ডেভেলপমেন্ট : ওয়েব ডিজাইন দেখে HTML ব্যবহার করে ওয়েবপেজের মূল কাঠামো তৈরি করা হয়। CSS ব্যবহার করে পেজগুলোর স্টাইলিং নির্ধারণ করা হয়। একে ওয়েবসাইটের ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপমেন্ট বলা হয়। ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপমেন্ট-এ HTML, CSS ছাড়াও আরো অনেক ভাষা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ওয়েবসাইটে ডেটাবেজ তৈরি ও সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং ভাষা ব্যবহার করে ডেটাবেজের সাথে কানেকশন তৈরি করে পূর্ণাঙ্গ সাইট তৈরি করা হয়। একে ব্যাক-এন্ড ডেভেলপমেন্ট বলে। যারা ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ব্যাক-এন্ড ডেভেলপমেন্ট উভয়টি জানেন তাদেরকে ফুলস্ট্যাক ডেভেলপার বলা হয়।
  • টেস্টিং ও ডিবাগিং : ওযেবপেজ ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টের পর অর্থাৎ ওয়েবসাইট তৈরির শেষ ধাপে এটির পরীক্ষা করতে হয়। কোডে ভুল পেলে সেগুলো ডিবাগিং বা ঠিক করতে হয়। বিভিন্ন ব্রাউজার ব্যবহার করে বারবার পেজটি প্রদর্শন করে দেখতে হয়, পেজের লোডিং টাইম, পেজগুলো রেস্পন্সিভ কিনা তা চেক করতে হয়। এক্ষেত্রে টেক্সট, ছবি লিঙ্ক ইত্যাদি ঠিক আছে কিনা তা চেক করতে হয়।
  • রক্ষণাবেক্ষন : সর্বশেষ ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ও ব্যাকআপ নিশ্চিৎ করতে হয়। হ্যাকিং ও ভাইরাসের হাত থেকে সাইটকে রক্ষা করার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। এছাড়া ওয়েবসাইটটি যুগোপযোগী করার জন্য প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ও পরিমার্জন করা হয়।

 

ওয়েবসাইট পাবলিশিং

কোন ওয়েবসাইট ডিজাইন করার পর হোস্টিং সেবার মাধ্যমে ইন্টারনেটে প্রকাশ করাকে ওয়েবসাইট পাবলিশিং বলে। দ্রুততম সময়ে যে কোন তথ্য মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হয়।

ওয়েবসাইট পাবলিশিং এর ধাপসমূহ :

ধাপ-০১: ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন ।
ধাপ-০২: ওয়েবপেজগুলো ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করা।
ধাপ-০৩: ডিজাইনকৃত সাইটটি সার্ভারে হোস্ট করা।
ধাপ-০৪: SEO করা অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিনের সাথে ওয়েবসাইটকে যুক্ত করা।

 

ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন :

প্রতিটি সাইটের একটি সতন্ত্র নাম থাকতে হয় যেটিকে ডোমেইন নেম বলে। সুন্দর একটি নাম যা সহজে মনে রাখা যায় এবং অর্থবোধক হয় তা নির্বাচন করে সেই নামের ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এ ডোমেইন নেমই ওয়েবসাইটকে অনন্যভাবে সনাক্ত করবে। বিশ্বের বিভিন্ন ভিজিটররা এই নামে ওয়েবসাইটটাকে চিনবে এবং এ নাম ব্যবহার করে একসেস করবে। ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডোমেইন প্রভাইডার কোম্পানি রয়েছে, যাদেরকে নির্দিষ্ট অর্থ দিয়ে ডোমইন নেম রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। ডোমেইন নেমে অক্ষর, শব্দ ও হাইফেন ব্যবহার করা যায় এবং নেমটি অবশ্যই ৬৩ ক্যারেক্টরের মধ্যে রাখতে হয়। তবে (.) ডট এবং একসটেনশনসহ ৬৭ ক্যারেক্টর হতে পারে।

 

ওয়েবপেজগুলো ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করা :

ওয়েবপেজ ডিজাইন হচ্ছে একটি ওয়েবপেজের জন্য বাহ্যিক কাঠামো তৈরি করা, যেখান থেকে ভিজিটররা সহজে প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে পারে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট বিষয় নির্ধারণ, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং ওয়েবপেজ প্রদর্শন এই তিনটি বিষয়ের সম্মিলিত রুপ। সুন্দর ওয়েবপেজ ডিজাইন করতে টেক্সট, চিত্র এবং ওয়েবপেজের কন্টেন্টগুলো বিভিন্ন পেজে কিভাবে প্রদর্শিত হবে ইত্যাদি ঠিক করতে হয়। প্রথমেই সুন্দর ও অর্থবোধক একটি টাইটেল দিতে হবে যাতে ব্যবহারকারী সহজে বুঝতে পারে। এছাড়া থিম, ভালো লোগো, অ্যালাইনমেন্ট, স্লাইসিং, টেক্সট, ইমেজ, এনিমেশন, অডিও, ভিডিও ইত্যাদির মাধ্যমে ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে হবে। অর্থাৎ এই ধাপে ওয়েবপেজ ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করে একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।

 

ডিজাইনকৃত সাইটটি সার্ভারে হোস্ট করা :

ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন ও ওয়েবপেজগুলো ডিজাইনের পরের কাজ হলো ডিজাইনকৃত সাইটটি সার্ভারে হোস্ট করা।
আমরাজানি, কোন তথ্যকে অন্যের কাছে তুলে ধরার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সহজ মাধ্যম হচ্ছে ওয়েবসাইট। আজকের কম্পিউটার ব্যবহারকারী মাত্রই ওয়েবসাইট সম্পর্কে অবগত আছেন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ওয়েবসাইট হলো কোন তথ্যকে অন্যের সামনে উপস্থাপন করার সহজ ব্যবস্থা যা টেক্সট, ছবি, অডিও, ভিডিওসহ যে কোন ধরণের তথ্য হতে পারে। ওয়েবসাইট ডিজাইন করার পরে ডিজাইনকৃত ফাইলগুলো কোন সার্ভারে রাখাকে হোস্টিং বলে। হোস্টিং মূলত অনলাইনে ওয়েবসাইট আপলোড করার সার্ভার বা কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের জায়গা। হোস্টিং করা ছাড়া ওয়েবসাইট পাবলিশ হয় না। এজন্যই ”হোস্টিং ওয়েবসাইট পাবলিশিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ” বলা হয়।

বিভিন্ন ধরণের সুবিধার উপর ভিত্তি করে হোস্টিং বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে যথা- শেয়ারড হোস্টিং,ডেডিকেটেড হোস্টিং, ফ্রি-হোস্টিং, ভিপিএস  হোস্টিং, কোলোকেটেড হোস্টিং ইত্যাদি। এছাড়া অপারেটিং সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে হোস্টিং ২ ধরনের হয়ে থাকে। যথা-উইন্ডোজ হোস্টিং এবং লিনাক্স হোস্টিং।

 

SEO করা :

ওয়েবসাইটকে বেশি প্রচারমুখী করার জন্য সার্চ ইঞ্জিনের সাথে সংযুক্ত করতে হয়। ওয়েবে তথ্য খোঁজার জন্য বেশ কিছু সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে যেমন-Google, Yahoo, Bing, Baidu, Yandex ইত্যাদি। এসব সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটকে তালিকাভুক্ত করা হলে সহজেই সাইটটিকে খুঁজে পওয়া যায়। ওয়েবসাইটকে প্রচারমুখী করার জন্য বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে সাবমিট বা সংযুক্ত করাকে এসইও বলে। SEO করা ওয়েবসাইট পাবলিশিংয়ের একটি অপশনাল ধাপ।

 

শিক্ষার্থীর বাড়ির কাজ : ডোমেইন ও হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য লেখ।

Go for Answer : Click Here

 

 



Written by:

Habibur Rahman(Habib Sir)
Author at www.habibictcare.com
Email:habibbzm2018@gmail.com
Cell: +8801712-128532,+8801913865284

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *